তিস্তা নদী

উৎপত্তি ও অবস্থান
তিস্তা নদী হিমালয়ের পূর্বাংশে ভারতের সিকিম রাজ্যের চোলামো হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। এটি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল অতিক্রম করে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। এই নদীটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী।

প্রবাহপথ
তিস্তা নদী বাংলাদেশে প্রবেশের পর মূলত নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুর জেলা অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখা নদী ‘দুধকুমার’-এর সঙ্গে মিলিত হয়। পরে এটি যমুনায় মিশে যায়।

দৈর্ঘ্য ও চরিত্র
তিস্তার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার, যার মধ্যে প্রায় ১২৪ কিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত। নদীটি বর্ষাকালে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে এবং প্রস্থ ২ কিলোমিটারের বেশি হয়ে যায়।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব
তিস্তা নদী বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নদীটি থেকে সেচ নিয়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধান, আলু, পাট ও অন্যান্য ফসল চাষ হয়। ‘তিস্তা ব্যারেজ’ নামক বিশাল সেচ প্রকল্প এই অঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব এনেছে।

তিস্তা পানি চুক্তি
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়। বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নদীর ওপর বহু বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করার কারণে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে পানির প্রবাহ অনেক কমে আসে। এটি বাংলাদেশে কৃষি ও জীববৈচিত্র্যে প্রভাব ফেলছে।

বন্যা ও ভাঙন সমস্যা
তিস্তা নদী বর্ষাকালে ব্যাপকভাবে প্লাবন সৃষ্টি করে। প্রতি বছর প্রচুর চাষযোগ্য জমি ও বসতভিটা নদীভাঙনের শিকার হয়। বিশেষ করে লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলার মানুষ এই দুর্ভোগে পড়ে।

সামাজিক প্রভাব
তিস্তা নদী ঘিরে অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকা আবর্তিত। মাছ ধরা, চরাঞ্চলের কৃষি, নৌ-যোগাযোগ এবং নদীভিত্তিক সংস্কৃতিতে তিস্তাকে কেন্দ্র করেই এই অঞ্চলের সমাজ গড়ে উঠেছে।

Check Also

df dsfs

Hi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *