ব্রহ্মপুত্র নদী

উৎপত্তি ও আন্তর্জাতিক পরিচয়
ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎপত্তি তিব্বতের মানস সরোবর থেকে। এটি ‘সাংপো’ নামে পরিচিত হয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে প্রবেশ করে এবং ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে আসামে প্রবাহিত হয়। এরপর নদীটি কুরিগ্রাম জেলার চিলমারীর কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘যমুনা’ হয়।

প্রবাহপথ
ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশে প্রবেশের পর মূলত বালাসি ঘাট, চিলমারী, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ হয়ে যমুনা নদীতে পরিণত হয়। তবে উত্তরাঞ্চলে স্থানীয়ভাবে অনেক জায়গায় নদীটিকে এখনো ব্রহ্মপুত্র হিসেবেই ডাকা হয়।

ভূগোল ও গতিপথ পরিবর্তন
১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদী মেঘনার সঙ্গে একত্রিত হতো। কিন্তু ১৮৮৭ সালের এক ভয়াবহ ভূমিকম্প ও প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে নদীটির প্রবাহ যমুনার দিকে পরিবর্তিত হয়। ফলে এটি বর্তমান যমুনা নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

অর্থনৈতিক ও কৃষিভিত্তিক গুরুত্ব
ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি সেচ ও কৃষিতে ব্যবহৃত হয়। এর পলিমাটি অনেক উর্বর। নদীটির তীরবর্তী অঞ্চল ধান, পাট, আলু চাষে বিখ্যাত। এছাড়াও নদীটি মাছ ধরার একটি বড় উৎস।

জলবায়ু ও বন্যা সমস্যা
প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদীতে বর্ষাকালে ব্যাপক জলস্ফীতি হয়। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার অনেক অঞ্চল প্লাবিত হয়। বন্যা এখানকার মানুষের জন্য চিরস্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নদীভাঙন ও পরিবেশগত ক্ষতি
নদীটির দুই তীরে অব্যাহত ভাঙনের কারণে অনেক মানুষ ঘরবাড়ি হারাচ্ছে। কুড়িগ্রাম, চিলমারী এলাকায় বহু স্কুল, রাস্তা, জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক
এই নদী বহু মানুষের জীবনধারা, রূপ, সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত। গ্রামীণ জীবনে নদীটি নৌকা, মাছ ধরা, কৃষিকাজ ও যাতায়াতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Check Also

df dsfs

Hi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *